ডিজিটাল বাংলাদেশের সঙ্গী

বাংলা কী বোর্ড ও সফটওয়্যার

নির্দেশিকা

বিজয় একুশে ইন্সটল করার প্রস্তুতি

বিজয় একুশে ব্যবহার করার জন্য কমপক্ষে উইন্ডোজ এক্সপি বা উইন্ডোজ ভিস্তা অথবা উইন্ডোজ সেভেন প্রয়োজন হবে। এর আগের কোন অপারেটিং সিস্টেমে এটি কাজ নাও করতে পারে। উইন্ডোজ ৩.১, ৯৫, ৯৮, এমই তে কাজ করবেনা। উইন্ডোজ এনটি ৪.০ এবং ২০০০-এ ইউনিকোড সঠিকভাবে কাজ করবে না। আপনার কম্পিউটারে উইন্ডোজ এক্সপি অপারেটিং সিস্টেম ইন্সটল করা থাকুক বা নতুন করে ইন্সটল করা হোক আপনি উইন্ডোজ-এর একটি বিশেষ অপশন অবশ্যই পরীক্ষা করে দেখবেন। আপনাকে দেখতে হবে যে, আপনার রিজিয়নাল এন্ড ল্যাঙ্গুয়েজ অপশন সঠিক করে দেয়া আছে কিনা। এর জন্য আপনি স্টার্ট মেনুর সেটিংস থেকে কন্ট্রোল প্যানেল বাছাই করে সেখান থেকে ল্যাঙ্গুয়েজ এন্ড রিজিয়নাল অপশন্স বাছাই করুন। সেখানে ইন্সটল ফাইলস ফর কমপ্লেক্স স্ক্রিপ্ট..... অপশনটিতে টিক চিহ্ন দেয়া আছে কিনা দেখুন। যদি সেটি দেয়া না থাকে তবে, এরপর সেখান থেকে কমপ্লেক্স স্ক্রিপ্ট অপশনটিতে টিক চিহ্ন প্রদান করুন। এটি চেক করলে কম্পিউটার আপনার কাছে উইন্ডোজ এক্সপির সিডি চাইবে। সিডিটি দেবার পর এই অপশনটি ইন্সটল হবে। মনে রাখবেন, এই অপশনটি টিক দেয়া না থাকলে ইউনিকোড বা গোল্ড অপশন ঠিকমতো কাজ করবে না।

ইন্সটল

বিজয় একুশে কম্পিউটারের নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা থেকে তথ্য বা উপাত্ত নিয়ে কাজ করে। এজন্য কম্পিউটারে অন্তত পক্ষে নেটওয়ার্ক ব্যবস্থার অংশ হিসেবে নেটওয়ার্ক কার্ড থাকতে হবে। কম্পিউটারের মাদারবোর্ডে নেটওয়ার্ক বিল্টইন থাকতে পারে। আবার আলাদা নেটওয়ার্ক কার্ড স্থাপন করতে হতে পারে। আনন্দ কম্পিউটার্স সফটওয়্যারের সাথে একটি নেটওয়ার্ক কার্ড সরবরাহ করতে পারে। এই অবস্থায় নেটওয়ার্ক কার্ডের পাসওয়ার্ডও প্রদান করা হয়। আপনি আপনার সিস্টেম ইউনিটে নেটওয়ার্ক কার্ডটি স্থাপন করে কোন পাসওয়ার্ড না দিয়েই বিজয় ইন্সটল করতে পারেন। যদি এই নেটওয়ার্ক কার্ডটি ইন্সটল না করে নিজের নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা ব্যবহার করতে চান তবে আপনাকে আইডি নাম্বার দিয়ে পাসওয়ার্ড সংগ্রহ করতে হবে। এজন্য আপনাকে আনন্দ কম্পিউটার্স বা তার পরিবেশকদের কাছ থেকে পাসওয়ার্ড নিতে হবে। আপনি এজন্য টেলিফোন, ইমেইল বা এসএমএস ব্যবহার করতে পারেন।
পাসওয়ার্ড নেবার সময় আপনাকে আপনার সফটওয়্যারের লাইসেন্স নাম্বার, আপনার নাম-ঠিকানা, অফিস-বাসার ফোন নাম্বার, ইমেইল ঠিকানা, মোবাইল নাম্বার এবং সফটওয়্যারের সংস্করণ (যেমন বিজয় একুশে ইত্যাদি) বিক্রেতার নাম ও ঠিকানা ইত্যাদি দিতে হতে পারে। ফলে এই তথ্যগুলো হাতের কাছে রাখুন। প্রথমেই আপনি আপনার কম্পিউটারের সিডি/ডিভিডি ড্রাইভে সফটওয়্যার সিডিটি প্রবেশ করান। এরপর আপনার সামনে একটি পর্দা আসবে যাতে আপনি সফটওয়্যারটি ইন্সটল করার জন্য একটি সংলাপ ঘর পাবেন। এই সংলাপ ঘরে আপনার কিছুই করনীয় নেই। এখানে আপনি নেক্সট বোতামে ক্লিক করুন। এরপর আপনার সামনে আরো একটি পর্দা আসবে। সেই পর্দাটিতে আপনি লাইসেন্স চুক্তিটি স্বীকার করার জন্য আই এক্সেপ্ট দি এগ্রিমেন্ট এর চেক বক্সে ক্লিক করে নেক্সট বোতামে ক্লিক করুন। আপনি যদি চান তবে স্ক্রল করে চুক্তিটির পুরোটা দেখতে পারেন। এতে সফটওয়্যার ব্যবহার করার সাধারণ শর্তাবলী দেয়া আছে।
এরপর নেক্সট বোতামে ক্লিক করার পর আপনার সামনে আরো একটি সংলাপ ঘর আসবে। সেখান থেকে আপনি কাস্টমস অপশন বাছাই করতে পারেন। এমনিতে যে ডিফল্ট অপশন দেয়া থাকবে সেটিও ব্যবহার করতে পারেন। তবে কাস্টমস অপশনে আপনি আপনার পছন্দমতো অপশনগুলো বাছাই করতে পারেন। তেমন অবস্থায় আপনাকে প্রথমে কীবোর্ড বাছাই করতে হবে। ওখানে আপনি ক্লাসিক কীবোর্ড ও ক্লাসিক ফন্ট বিল্টইন পাবেন। এর সাথে আপনি ইউনিকোড, সাবরিণা, মুনির, বিজয় গোল্ড, গীতাঞ্জলী, সত্যজিত ইত্যাদি বাছাই করতে পারবেন। আপনার যদি প্রয়োজন না থাকে তবে এতোসব বাছাই না করলেও পারেন। কীবোর্ড বাছাই করার পর আপনি স্ক্রল করে একটু নীচে যাবেন এবং সেখান থেকে সংশ্লিষ্ট ফন্ট বাছাই করবেন। ওএমজে, এসএমজে ইত্যাদি ফন্ট বাছাই করা হলে আপনি নেক্সট বোতামে ক্লিক করবেন এবং আপনার সামনে আরো একটি সংলাপ ঘর আসবে। সেখান থেকে আপনি কোথায় সফটওয়্যারটি ইন্সটল করতে চান সেটি বাছাই করতে পারেন। এরপর নেক্সট বোতামে ক্লিক করলেই আপনার সামনে একটির পর একটি পর্দা আসতে থাকবে। আপনি সেখানে কিছুই করবেন না।
মনে রাখবেন যে আপনি যদি উইন্ডোজ এক্সপিতে প্রথমবারের মতো সফটওয়্যার ইন্সটল করেন তবে এতে ডটনেট ফ্রেমওয়ার্ক ইন্সটল করতে অনেক সময় লাগবে। পরের বার আর তেমন সময় লাগবেনা যদি ডটনেট আপনি রিমোভ না করেন। উইন্ডোজ ভিস্তায় ডটনেট ইন্সটল করতে হয়না। ফলে ডট নেট ইন্টসল করার সংলাপ ঘর আপনি দেখবেন না। এবার আপনার বিজয় স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হবে এবং আপনার সামনে একটি আইডি নাম্বারসহ একটি সংলাপ ঘর আসবে। এই আইডি নাম্বারটি আপনি আনন্দ কম্পিউটার্স বা তার প্রতিনিধির কাছে প্রদান করলে আপনি একটি পাসওয়ার্ড পাবেন। পাসওয়ার্ডের শূণ্য ঘরে আপনি সেটি টাইপ করুন। এবার আপনার বাংলা লেখার সফটওয়্যার চালু হয়ে গেলো।

বিজয় একুশে আনইন্সটল/ রিমোভ

বিজয় একুশে এবং এর সাথে জড়িত সফটওয়্যারগুলো আনইন্সটল করার জন্য আপনি প্রোগ্রামস মেনু থেকে বিজয় বাছাই করুন। সেখান থেকে আনইন্সটল বাছাই করুন। এতে আপনার বিজয় একুশে সফটওয়্যার আনইন্সটল হবে। এছাড়া কন্ট্রোল প্যানেল থেকে এ্যাড রিমোভ প্রোগ্রামস বাছাই করে সেখান থেকে বিজয় একুশে আনইন্সটল করতে পারবেন। তবে এই সফটওয়্যারের ফন্টসগুলো ফন্টস ফোল্ডারে থেকেই যাবে। আপনাকে ঐ ফোল্ডার থেকে নিজে বাছাই করে ফন্টসগুলো ডিলিট করতে হবে। আপনি অপারেটিং সিস্টেম-এর সার্চ কমান্ড দিয়ে ফন্টসগুলো এমজে/ওএমজে জিএমজে ইত্যাদি হিসেবে একত্রিত করে ডিলিট করতে পারেন।

বিজয় একুশে ব্যবহার

আপনি যদি বিজয় এর সাথে পরিচিত হয়ে থাকেন তবে বিজয় একুশের ক্লাসিক অপশনটি ব্যবহার করার জন্য তেমন আলাদা কিছু করতেই হবে না। বিজয় একুশে ইন্সটল হবার পর আপনার সামনে স্টার্ট আপ স্ক্রীন আসার পরই একটি মেনু বার আসবে। সবুজ রঙের এই মেনুবারটিতে বাংলা বিজয় একুশে লেখা থাকবে। বিজয় লেখাটি থাকবে লাল রঙ্গে। অন্য লেখাগুলো থাকবে সাদায়। কম্পিউটার অন করার সাথে সাথে এটি ইংরেজীতে ডিফল্ট থাকবে।
আপনি যদি বিজয় একুশে ব্যবহার করে বাংলা টাইপ করতে চান তবে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, ওপেন অফিস বা কম্পিউটারে লেখা যায় এমন কোন এপ্লিকেশন ওপেন করুন। আপনি অন্যান্য কাজেও বিজয় একুশে ব্যবহার করতে পারবেন। গ্রাফিক্স (যেমন ফটোশপ, ইলাসট্রেটর সিএস ২), পেজ মেক আপ (যেমন ইনডিজাইন সিএস ২ বা কোয়ার্ক এক্সপ্রেস ৭.০) ভিডিও এডিটিং (যেমন প্রিমিয়ার প্রো), ডাটাবেজ (যেমন একসেস, এসকিউএল, ওরাকল), ই-মেইল এবং ইন্টারনেট ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিজয় একুশে ব্যবহার করতে পারবেন।
এবার আপনার সামনে লেখালেখির জন্য অনেকগুলো পথ খোলা থাকবে। এর সাথে থাকবে ডাটা কনভার্ট করার কনভার্টার এবং অভিধান ব্যবহার করার সুযোগ। বিজয় একুশে এর ক্লাসিক মোড সবচেয়ে ব্যবহৃত হয়। ক্লাসিক মোড মানে হচ্ছে কম্পিউটারের আসকি কোড ব্যবহার করে আমরা ১৯৮৭ সালে যে বাংলা ভাষা প্রচলন করেছিলাম তার ঐতিহ্যবাহী ধারা। ১৯৯৩ সালে আমরা বিজয়-এর যে উইন্ডোজ সংস্করণটি প্রকাশ করি তার পরিমার্জিত এনকোডিং হলো বিজয় ক্লাসিক-এর। এই মোডে কাজ করার জন্য কীবোর্ড দিয়ে Ctrl+Alt+b টাইপ করুন। এবার SutonnyMJ বা নামের শেষে MJ, EMJ, CMJ, PMJ, NMJ,TMJ আছে এমন অন্য কোন ফন্ট বাছাই করুন। এবার বিজয় কীবোর্ড অনুসারে টাইপ করুন। আপনি বাজারে বিজয় কীবোর্ড লেআউট মুদ্রিত কীবোর্ড পাবেন। তবে বিজয় কীবোর্ড লেআউট মুদ্রিত নয়, এমন অন্যান্য কীবোর্ড দিয়েও আপনি বিজয় বা অন্য কোন কীবোর্ড লেআউট অনুসারে বাংলা লিখতে পারবেন।
বাংলা লেখা শুরু করার পর আপনি যদি আবার বিজয় কীবোর্ড অনুসারে বাংলা টাইপ করার পাশাপাশি ইংরেজী টাইপ করতে চান তবে আবার Ctrl+Alt+b টাইপ করুন এবং নামের শেষে এমজে নেই, এমন (ইংরেজী) ফন্ট বাছাই করুন। বিজয় একুশে -এর ক্লাসিক মোডে আপনি মুনীর কীবোর্ড ব্যবহার করতে পারেন। এজন্য আপনাকে Ctrl+Alt+m টাইপ করতে হবে। আমাদের পূর্ববর্তী সংস্করণে Ctrl+Alt+k এটি ছিলো। তবে মুনীর কীবোর্ড ব্যবহার করার জন্য আপনাকে SutonnyMJ বা নামের শেষে MJ, EMJ, CMJ, LMJ, NMJ,TMJ আছে এমন অন্য কোন ফন্ট বাছাই করতে হবে। বিজয় কীবোর্ড দিয়ে যুক্তাক্ষর তৈরী করতে ইংরেজী জি এবং মুনীর কীবোর্ড দিয়ে যুক্তাক্ষর তৈরী করতে \ (ব্যাক স্লাশ) ব্যবহার করতে হবে। মুনীর কীবোর্ড যেভাবে টাইপরাইটারে ব্যবহৃত হয় সেটিও আপনি ব্যবহার করতে পারেন। আপনি যদি বিজয়-এর গোল্ড অপশন ব্যবহার করতে চান তবে আপনি Ctrl+Alt+g টাইপ করুন। এবার আপনি SutonnyGMJ বা নামের শেষে GMJ, GEMJ, GCMJ, GLMJ, GNMJ, GTMJ আছে এমন অন্য কোন ফন্ট বাছাই করতে হবে।
বিজয় সাবরিণা ব্যবহার করার জন্য নামের শেষে SMJ আছে এমন ফন্ট ব্যবহার করুন। সাবরিণাতে কেবল বিজয় কীবোর্ড পাওয়া যায়। এজন্য আপনাকে Ctrl+Alt+k ব্যবহার করতে হবে।
আপনি যদি ইউনিকোড পদ্ধতিতে টাইপ করতে চান তবে Ctrl+Alt+v টাইপ করুন। ইউনিকোড অপশন ব্যবহার করার জন্য নামের শেষে OMJ আছে এমন ফন্ট বাছাই করুন।

কীবোর্ড কমান্ড পরিবর্তন

বিজয় একুশে এর একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য হলো যে, এই সংস্করণটিতে কীবোর্ড কমান্ড ইচ্ছেমতো পরিবর্তন করা যায়। আপনি বিজয়-বার এর ইংরেজী ও বোতামে ক্লিক করলে সেটিংস নামে একটি অপশন পাবেন। এই সেটিংসটি বাছাই করা হলে আপনি একটি সংলাপ ঘর পাবেন। এই সংলাপ ঘরে বিদ্যমান কীবোর্ড-কমান্ডগুলো দেয়া থাকবে। আপনি লক্ষ্য করবেন যে, এতে তিনটি সারি আছে। একটিতে সিটিআরএল, পরেরটিতে এএলটি এবং তার পরেরটিতে শিফট লেখা আছে। আমরা সকল কীবোর্ড কমান্ডকেই সিটিআরএল এবং এএলটি সহযোগে তৈরী করেছি। আপনি ইচ্ছে করলে এই তিনটির যেকোন কম্বিনেশন ব্যবহার করে কীবোর্ড কমান্ড তৈরী করতে পারবেন। অন্যদিকে বর্ণের ঘরে বিদ্যমান বর্ণ পাল্টাতে পারবেন এবং বর্ণ বা কমান্ড বাছাই করতে পারবেন।

আপনি নিম্নরূপে বিজয়-এর বিভিন্ন অপশন বাছাই করতে পারবেন
কীবোর্ড/ অপশনের নাম কীবোর্ড কমান্ড ফন্ট এর নামের শেষাক্ষর
ক্লাসিক মোডে বিজয় কীবোর্ড ব্যবহার করার জন্য ctrl+alt+b MJ, EMJ, CMJ, TMJ, PMJ, LMJ
ক্লাসিক মোডে মুনীর কীবোর্ড ব্যবহার ctrl+alt+m MJ, EMJ, CMJ, TMJ, PMJ, LMJ
ক্লাসিক মোডে গীতাঞ্জলি কীবোর্ড ব্যবহার ctrl+alt+z MJ, EMJ, CMJ, TMJ, PMJ, LMJ
ক্লাসিক মোডে সত্যজিত কীবোর্ড ব্যবহার ctrl+alt+x MJ, EMJ, CMJ, TMJ, PMJ, LMJ
ক্লাসিক মোডে অসমিয়া গীতাঞ্জলি ctrl+alt+a AMJ
ক্লাসিক মোডে অসমিয়া সত্যজিত ctrl+alt+s AMJ
সাবরিণা মোডে বিজয় কীবোর্ড ব্যবহার ctrl+alt+c SMJ
গোল্ড মোডে বিজয় কীবোর্ড ব্যবহার ctrl+alt+g GMJ
ইউনিকোড মোডে বিজয় কীবোর্ড ব্যবহার ctrl+alt+v OMJ
ইউনিকোড মোডে স্ট্যান্ডার্ড কীবোর্ড ব্যবহার ctrl+alt+n OMJ
স্মরণ করতে পারবেন যে, এখানে যেসব কমান্ড দেয়া আছে সেগুলো পরিবর্তন করা যেতে পারে।

বিজয় কীবোর্ড-এ টাইপ করার সহজ নিয়মাবলী

বিজয় কীবোর্ড তৈরি করা হয়েছে এমনভাবে যাতে সহজেই সকল বাংলা অক্ষর তৈরি করা যায়। বিভিন্ন অপশনে বিজয় কীবোর্ড ব্যবহার করার জন্য বিভিন্ন কীবোর্ড কমান্ড ব্যবহার করতে হয়। বিজয় একুশে -এর উইন্ডোজ বা ম্যাক সংস্করণ চালু হবার পর এর ডিফল্ট কীবোর্ড থাকে ইংরেজী। যখনই উইন্ডোজ সংস্করণে ইংরেজী থেকে বাংলা বা অসমিয়া টাইপ করতে হয় তখন কীবোর্ড কমান্ড দিয়ে বদল করতে হয়। যেমন ইংরেজী থেকে ক্লাসিক বিজয় এর জন্য কন্ট্রোল অলটার বি, ইংরেজী থেকে সাবরিণা বিজয়-এর জন্য কন্ট্রোল+অলটার+সি, ইংরেজী থেকে বিজয় গোল্ড এর জন্য কন্ট্রোল+অলটার+জি, ইংরেজী থেকে ইউনিকোড বিজয়-এর জন্য কন্ট্রোল+অলটার+ভি ব্যবহার করতে হয়। বিজয়-এর পূর্ববর্তী কোন কোন সংস্করণে মাউস ক্লিক দিয়ে কীবোর্ড বদল করা যেতো। কিন্তু বিজয় একুশে -এর উইন্ডোজ সংস্করণে সেই সুযোগ না রেখে খুব দ্রুত এবং সহজে কীবোর্ড বা অপশন বদলানোর জন্য কীবোর্ড কমান্ড ব্যবহার করতে হয়।
একইভাবে এসব কীবোর্ড থেকে ইংরেজীতে ফিরে আসতে হলে একই কীবোর্ড কমান্ড ব্যবহার করতে হয়। যেমন ক্লাসিক বিজয় থেকে ইংরেজীতে যেতে আবার কন্ট্রোল+অলটার+বি, সাবরিণা বিজয় থেকে ইংরেজীতে যেতে কন্ট্রোল+অলটার+সি, গোল্ড বিজয় থেকে ইংরেজীতে যেতে কন্ট্রোল+অলটার+জি, এবং ইউনিকোড বিজয় থেকে ইংরেজীতে যেতে কন্ট্রোল+অলটার+ভি ব্যবহার করতে হয়।
মনে রাখবেন, শুধুমাত্র কীবোর্ড বদল করলেই সঠিকভাবে বাংলা লেখা হবেনা। এজন্য সঠিক ফন্টও ব্যবহার করতে হবে। ওপরে প্রদত্ত তালিকায় কোন অপশনে/মোডে কোন ফন্ট ব্যবহার করতে হয় তার বিবরণ প্রদান করা হয়েছে। মেকিন্টোস-এর জন্য প্রণীত বিজয় একুশে সফটওয়্যারে ক্লাসিক এবং গোল্ড দুটি অপশনেই বিজয় কীবোর্ড ব্যবহার করা যায়।
১. কম্পিউটারে কীবোর্ড ব্যবহার করার জন্য সাধারণত দুটি হাতের দশটি আঙ্গুলই ব্যবহার করা হয়। প্রথমে ইংরেজি টাইপ করার নিয়ম অনুযায়ী দুই হাতের আঙ্গুলগুলি যথাস্থানে রাখতে হবে। মনে রাখা ভালো, বাম হাতের আঙ্গুলগুলিতে প্রধানত স্বরচি‎হ্নগুলো (দুটি স্বরবর্ণসহ) থাকবে। ডান হাতের আঙ্গুলগুলোতে থাকবে ব্যঞ্জনবর্ণগুলো। ২. বিজয় কীবোর্ডে যেখানে সম্ভব অল্পপ্রাণ ও মহাপ্রাণ জোড়া হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। যেমন- অ-া, -িী, -ে,ৈ ও-ৗ, ক-খ, গ-ঘ, চ-ছ, জ-ঝ, ট-ঠ, ড-ঢ, ত-থ, দ-ধ, প-ফ, ব-ভ, ড়-ঢ়। এসব বর্ণের বিন্যাস হলো এমন যে, অল্পপ্রাণ অক্ষরগুলো স্বাভাবিক অবস্থায় ও মহাপ্রাণ অক্ষরগুলো শিফট অবস্থায় থাকবে। অবশ্য কোন কোন ক্ষেত্রে (যেমন ণ-ন, ষ-স) ব্যতিক্রমও আছে। এছাড়া ৃর্-, অ-া, ্র-্য, র-ল, ম-শ, ইত্যাদি জোড়াগুলোও একই বোতামে স্বাভাবিক ও শিফট অবস্থায় রয়েছে। ৩। ইংরেজি জি বোতামটিকে রূপান্তর বোতাম হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। এই বোতামটির সাহায্যে স্বরচিহ্নকে স্বরবর্ণে এবং ব্যঞ্জনবর্ণকে যুক্তাক্ষরে রূপান্তর করা যায়।

বিজয় মুনীর কীবোর্ড-এ টাইপ করার সহজ নিয়মাবলী

বিজয় একুশে -উইন্ডোজ-এর বিজয় মুনীর কীবোর্ড কেবলমাত্র ক্লাসিক মোডে ব্যবহার করতে পারবেন। এটি ব্যবহার করার জন্য আপনাকে কন্ট্রোল+অলটার+এম কী বোর্ড কমান্ড ব্যবহার করতে হবে। মুনীর কীবোর্ড থেকে ইংরেজীতে ফিরে যাবার জন্য আপনাকে আবার একই কমান্ড (কন্ট্রোল+অলটার+এম) ব্যবহার করতে হবে। তবে আপনি যদি মুনীর কীবোর্ড থেকে বিজয় কীবোর্ডে যেতে চান তবে কন্ট্রোল অলটার বি টাইপ করলেই হবে। একইভাবে যদি আপনি সত্যজিত, গীতাঞ্জলি বা বিজয় থেকে মুনীরে আসতে চান তবে কন্ট্রোল অলটার এম বোতাম চাপবেন।
এটি এমনভাবে প্রস্তুত করা যে আপনি টাইপরাইটারে মুনীর কীবোর্ড যেভাবে ব্যবহার করতে হয় সেভাবে ব্যবহার করতে পারেন। তবে যেহেতু কম্পিউটারে সুযোগ বেশী আছে, সেহেতু এখানে আপনি কিছু বাড়তি কাজ করতে পারেন। আমরা অপটিমা মুনীর টাইপরাইটারের ডেড কী-টাকে (কম্পিউটারের ব্যাক স্পেস) লিঙ্ক কী হিসেবে ব্যবহার করেছি। এই কীবোর্ড দিয়ে সরাসরি বিজয়-এর মতো লিঙ্ক ব্যবহার করে বা টাইপরাইটারের মতো ফলা ব্যবহার করে টাইপ করা যায়। লিঙ্ক ব্যবহার করার সময় বিজয়-এর মতো মূল বর্ণ (যেমন ব লিঙ্ক ব = ব্ব) এবং লিঙ্ক ব্যবহার করতে হয়। একইভাবে র ফলা, য ফলা, রেফ সরাসরি ব্যবহার করতে হয়।

প্রমিত কীবোর্ড-এ টাইপ করার সহজ নিয়মাবলী

২০০৪ সালে বাংলাদেশ সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড এন্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউট বিডিএস ১৭৩৮:২০০৪ সংখ্যায় একটি প্রমিত (স্ট্যান্ডার্ড) কীবোর্ড ঘোষণা করেছে। এটি কার্যত বিজয় কীবোর্ড-এর নকল। এর ইংরেজী 'এফ' এবং 'এইচ' বোতাম দুটি বিজয়-এর সাথে অদল-বদল করা। এতে বিজয় কীবোর্ডের 'এফ' বোতামের বর্ণ দুটি 'এইচ' বোতামে এবং 'এইচ' বোতামের শব্দ দুটি 'এফ' বোতামে অদল বদল করা হয়েছে। এছাড়াও বিজয় কীবোর্ডে যেসব বর্ণ প্রথমে 'জি' টাইপ করে তৈরী করতে হয় সেসব বর্ণ আল্ট+জিআর ব্যবহার করে তৈরী করতে হয়। এর ফলে এটি চার স্তরের কীবোর্ড হয়ে গেছে।
এটির পদ্ধতি এমন যে, এটি কেবলমাত্র ইউনিকোড পদ্ধতিতে ব্যবহার করা যায়। আমাদের সফটওয়্যারে কন্ট্রোল+অলটার+এন কমান্ড ব্যবহার করে এই কীবোর্ডটিকে সক্রিয় করা যায়। যেভাবে আপনি বিজয় কীবোর্ডে লিঙ্ক ব্যবহার করেন সেভাবে এখানেও লিঙ্ক ব্যবহার করবেন। তবে আমরা আল্ট জিআর পদ্ধতি এতে প্রয়োগ করিনি। বরং বিজয়-এর মতো এখানে জি দিয়ে স্বরবর্ণ তৈরী করা যায়।
অন্যদিকে এই কীবোর্ডটির একটি বড় বৈশিষ্ট্য হলো যে, এতে অনেক স্বরচিহ্ন বর্ণের পরে টাইপ করতে হয়। এই স্বরচিহ্নগুলো হলো ,ে ,ৈ াে, িকার। এর প্রধান কারণ হলো যে ইউনিকোড পদ্ধতিতে এই স্বরচিহ্নগুলো এভাবে সংরক্ষণ করা হয়। ইউনিকোড রেন্ডারিং ইঞ্জিন এভাবেই রেন্ডার করে। এই পদ্ধতিটি সাধারণ ব্যবহার-কারীদের জন্য বেশ জটিল। এই পদ্ধতিতে 'কে' লিখতে হলে প্রথমে 'ক' টাইপ করতে হবে, তারপর ''ে টাইপ করতে হবে। যদিও দুটি বর্ণ টাইপ করার পর বর্ণটি 'ক"ে থেকে 'কে' হবে, তথাপি আমরা এভাবে টাইপ করতে অভ্যস্ত নই। প্রকৃতার্থে আমরা যেভাবে দেখি সেভাবে টাইপ করতে অভ্যস্ত। এই কীবোর্ডটির বিকল্প হচ্ছে বিজয়। বিজয় ইউনিকোড পদ্ধতিতেও আসকির মতোই কাজ করে। ফলে ইউনিকোড কিংবা ক্লাসিক সব অপশনেই আপনি স্বাভাবিকভাবে বিজয় কীবোর্ড ব্যবহার করতে পারেন। এই কীবোর্ড ব্যবহারের জন্য আরো একটি বিষয় মনে রাখতে হবে। এই কীবোর্ডে র ফলা নেই। র ফলার জন্য হসন্ত র ব্যবহার করতে হবে।

গীতাঞ্জলি ও সত্যজিত কীবোর্ড-এ টাইপ করার সহজ নিয়মাবলী

গীতাঞ্জলি ও সত্যজিত ভারতের দুটি জনপ্রিয় কীবোর্ড। এই দুটি কীবোর্ড বাংলা লিখতে যেমন ব্যবহৃত হয় তেমনি অসমিয়া লিখতেও ব্যবহৃত হয়। ক্লাসিক মোড-এ গীতাঞ্জলি কীবোর্ড ব্যবহার করার জন্য আপনি কন্ট্রোল অলটার জেড এবং সত্যজিত কীবোর্ড ব্যবহার করার জন্য কন্ট্রোল+অলটার+এক্স ব্যবহার করতে পারেন। একইভাবে যদি গীতাঞ্জলি থেকে ইংরেজীতে যেতে হয় তবে আবার কন্ট্রোল+অলটার+জেড চাপতে হবে। সত্যজিতের জন্যও একই নিয়ম প্রযোজ্য। আপনি যদি সত্যজিত থেকে গীতাঞ্জলি কীবোর্ডে যেতে চান তবে কন্ট্রোল+অলটার+জেড এবং গীতাঞ্জলি থেকে সত্যজিত-এ যেতে চান তবে কন্ট্রোল+অলটার+এক্স ব্যবহার করতে হবে।
এই দুটি কীবোর্ড ব্যবহার করার জন্য ইংরেজী ডি বোতামকে লিঙ্ক কী হিসেবে ব্যবহার করতে হয়। তবে দুটি কীবোর্ডে বর্ণের অবস্থান ভিন্ন ভিন্ন। আমরা দুটি কীবোর্ডের ছকই ব্যবহার করেছি। এছাড়াও এই দুটি কীবোর্ডের অসমিয়া সংস্করণকে আলাদাভাবে প্রয়োগ করেছি। কারণ এই দুটি কীবোর্ডের অসমিয়া সংস্করণ বাংলা সংস্করণের চাইতে ভিন্ন। এই কীবোর্ডে র ফলার জন্য হসন্ত র টাইপ করতে হয়। যেমন প্র লিখতে প+্‌্‌+র টাইপ করতে হবে। বাংলা গীতাঞ্জলি কীবোর্ড পাবার জন্য আপনি কন্ট্রোল অলটার জেড এবং সত্যজিত কীবোর্ড পাবার জন্য কন্ট্রোল অলটার এক্স কমান্ড দিন।

অসমিয়ার জন্য গীতাঞ্জলি ও সত্যজিত কীবোর্ড-এ টাইপ করার সহজ নিয়মাবলী

সত্যজিত এবং গীতাঞ্জলি কীবোর্ড বাংলায় যেমন ব্যবহৃত হয় তেমনি অসমিয়াতে ব্যবহৃত হয়। তবে অসমিয়ার জন্য যে কীবোর্ড বাংলার জন্য সেই একই কীবোর্ড নয়। অসমিয়ায় গীতাঞ্জলি কী লেআউট ব্যবহার করার জন্য কন্ট্রোল অলটার এ এবং সত্যজিত কী লেআউট ব্যবহার করার জন্য কন্ট্রোল অলটার এস ব্যবহার করতে হয়। ইংরেজীতে যাবার জন্যও একই কমান্ড ব্যবহার করতে হয়। এই কীবোর্ডে র ফলার জন্য হসন্ত র টাইপ করতে হয়। যেমন প্র লিখতে প+্‌+র টাইপ করতে হবে। অসমিয়ার জন্য এমজে এর বদলে এএমজে ফন্ট ব্যবহার করতে হয়।